আমি একজন বাংলাদেশী নাগরিক,গণতান্ত্রিক ভাবে আমি একটি রাজনৈতিক দলকে ভালোবাসি। এটা আমার অধিকার।"এটা আমার অধিকার।" হাজিগঞ্জ-শাহরাস্তি গণ মানুষের নেতা আল হাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক ভাইয়ের সালাম নিন।

Breaking News

৩১ বছর পর বরিশালে বরিশালে বিএনপি’র রাজনীতিতে সরোয়ার যুগের অবসান ছিটকে পড়লো।

 ৩১ বছর পর বরিশালে বরিশালে বিএনপি’র রাজনীতিতে সরোয়ার যুগের অবসান ছিটকে পড়লো।

বরিশালে বিএনপি’র রাজনীতিতে মজিবর রহমান সরোয়ার-এর আধিপত্য ৩১ বছরের। দলের ভেতরে বিরোধিতা থাকার পরও তিন দশক কৃতিত্বের সংগে কর্তৃত্ব বজায় রেখেছেন তিনি। দলীয় পদ-পদবি থেকে শুরু করে নির্বাচনী রাজনীতিতে সরোয়ার-প্রভাব ছিলো একচ্ছত্র। সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ, সিটি করপোরেশনের মেয়র, বরিশাল বিএনপি’র সভাপতি-সম্পাদক যখন যে পদ চেয়েছেন, সেটাই আদায় করেছেন। নিজে পদ নিয়েছেন এবং অন্যকে পদ দিয়েছেন। এককথায় দলে মজিবর রহমান সরোয়ার ছিলেন অপ্রতিরোধ্য নেতা।

গত কয়েক বছরে তাঁর নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে এককাট্টা হয়ে মাঠে নামেন সরোয়ার-বিরোধী বলয়ের নেতারা। তাঁদের নানামুখী তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত বরিশাল বিএনপি থেকে কার্যত ছিটকে পড়লেন মজিবর রহমান সরোয়ার। তাঁকে বাদ দিয়েই গঠন করা হয়েছে বরিশাল মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলার নতুন কমিটি। বুধবার (৪ নভেম্বর) কেন্দ্র থেকে ঘোষিত নতুন কমিটিগুলোতে স্থান পাননি তাঁর কোনো অনুসারীও।

সরোয়ার-এর উত্থান যেভাবে ,জিয়াউর রহমান-এর শাসনামলে শ্রমিক রাজনীতি দিয়ে বিএনপিতে সম্পৃক্ত হন সরোয়ার। এরশাদের আমলের বেশির ভাগ সময় হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় কারাগারে ছিলেন তিনি। সে সময় শ্রমিক দলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে প্রথমবার বরিশাল-৩ আসন থেকে বিএনপি’র মনোনয়ন পান তিনি। কিন্তু ভোটের আগে তাঁকে সরিয়ে ওই আসনে মোশারফ হোসেন মঙ্গুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে কয়েক মাস পরই ভাগ্য খুলে যায় সরোয়ার-এর। সদর আসনের সাংসদ আবদুর রহমান বিশ্বাস রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর উপনির্বাচনে ওই আসনের সাংসদ হন সরোয়ার। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সরোয়ার-এর বদলে বিএনপি’র মনোনয়ন পান আবদুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে নাসিম বিশ্বাস। বছর দুয়েক পর নাসিম-এর মৃত্যুতে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পান সরোয়ার। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সাংসদের পাশাপাশি হুইপ ও জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রিত্ব পান। পরবর্তী সময়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। 

দ্বিতীয় দফায় উপনির্বাচনে সাংসদ হওয়ার পরই বরিশালে বিএনপি ও অংগ-সহযোগী সংগঠন গড়ে তোলেন একক আধিপত্য। যখন যে পদ চেয়েছেন, পেয়েছেন। অনুসারীদেরও বিভিন্ন পদে বসিয়েছেন। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সরোয়ার-এর মতো একই সংগে একাধিক পদে থাকার রেকর্ড নেই আর কারও। বর্তমানে তিনি বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব। বরিশাল মহানগর বিএনপি’র সদ্যবিলুপ্ত কমিটিতেও সভাপতি ছিলেন তিনি। এর আগে জেলা কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি। নিজের অবস্থান অটুট রাখতে নিজ দলের নেতাদেরই নানাভাবে কোণঠাসা করেছেন সরোয়ার। এ নিয়েই বিরোধের সূত্রপাত। ছিটকে গেলেন যেভাবে ,সরোয়ারকে ঠেকাতে ২০১৯ সালের দিকে নব্বইয়ের দশকে ছাত্রদলের রাজনীতি করা একাধিক নেতা জোট বাঁধেন। চলতি বছরের শুরুতে সরোয়ার-বিরোধী এই বলয়ে যুক্ত হন নগর বিএনপি’র তৎকালীন নেতা মনিরুজ্জামান ফারুকসহ অনেকে। পরবর্তী সময়ে অংগ ও সহযোগী সংগঠনের একটি বড় অংশও তাঁদের সংগে যোগ দেয়। তাঁদের মধ্যে সরোয়ার-এর আস্থাভাজন অনেকেও ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, নিজের অবস্থান সমুন্নত রাখতে যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের পদে বসিয়েছেন সরোয়ার। বিরোধী বলয়ের এই নেতারা সমর্থন পেয়েছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার শিরিনেরও। তাঁদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও প্রচারে শেষ পর্যন্ত নতুন কমিটি থেকে ছিটকে পড়লেন সরোয়ার। 

৩১ বছর পর বরিশালে বরিশালে বিএনপি’র রাজনীতিতে সরোয়ার যুগের অবসান ছিটকে পড়লো।


 

No comments