সাহস থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন (রুহুল কবির রিজভী)
সাহস থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন (রুহুল কবির রিজভী)
সাহস থাকলে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের জন্য সরকার প্রধানের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তখন বুঝা যাবে- দল হিসেবে আওয়ামী লীগ টিকে থাকবে কি থাকবে না।
ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে এক পাঠচক্রে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী।
গত সোমবার যুক্তরাজ্যের কুইন এলিজাবেথ সেন্টারে দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদালতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সাজা হওয়ায় রাজনৈতিক দল হিসেবে ভবিষ্যতে দলটির অস্তিত্ব টিকে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বলেছেন, সাহস থাকলে তারেক রহমান দেশে ফিরে আসুক। এসব প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনারা ১৪টি বছর বিনা ভোটে জোর করে ক্ষমতায় আছেন। ন্যূনতম সাহস থাকলে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন দিতেন। ভীরু বলে সুষ্ঠু নির্বাচন দেন না, দিনের ভোট রাতে করেন। আপনাদের নাকি খুব সাহস। তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাদ দিয়ে ও পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তখন বুঝা যাবে, দল হিসেবে ভবিষ্যতে কারা টিকে থাকবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগেরই অস্তিত্ব থাকবে না। কারণ, সুষ্ঠু ভোট হলে জনগণ আপনাদেরকে পরিত্যাগ করবে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার সৎ সাহস আপনাদের নেই।
তিনি বলেন, বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসে আপনারা নাৎসীবাদ কায়েম করেছেন, জনগণকে পরিত্যাগ করেছেন। জনগণ কষ্টে থাকলেও আপনারা সেটা দেখতে পান না। জ্বালানি তেল ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। কিন্তু সেদিকে আপনাদের কোনো খেয়াল নেই। আপনারা লুটপাটে ব্যস্ত। এ সময় ৭ নভেম্বরের সিপাহী-জনতার বিপ্লবকে ফরাসী বিপ্লবের সাথে তুলনা করে রিজভী বলেন সেই বিপ্লবের স্লোগান ছিল সাম্য-মৈত্রী ও স্বাধীনতা। ঠিক ৭ নভেম্বর দেশের সিপাহী-জনতা যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। যেই আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে দেশের মানুষ ক্ষমতায় বসিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছিল সেই আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছিল বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে। ফরাসী বিপ্লবের সব বৈশিষ্ট্যের সাথে সাত নভেম্বরের বিপ্লবের সাথে মিল রয়েছে।
বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ‘পাঠচক্র’ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ও পাঠচক্রের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আবুল হাসানের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব:) জয়নাল আবেদীন, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সহসভাপতি সাইদুর রহমান মিন্টু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ‘৭ নভেম্বর গণবিপ্লব : জাতিগত সার্বভৌমত্ব অর্জন ও স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি শাহরিয়ার হক মজুমদার শিমুল। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নাদিয়া পাঠান পাপন, দক্ষিণ যুবদলের গিয়াস উদ্দিন মানিক, যুবদল নেতা গিয়াস উদ্দিন মামুন, ঢাকা পূর্ব ছাত্রদলের শেখ খালিদ হাসান জ্যাকি, মো. আল আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদ, রাজু আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
No comments